সংলাপে ‘আশার আলো’ দেখছেন পুতিন, জানালেন গুতেরেসকে
ইউক্রেনের সঙ্গে সংলাপে এখনো ‘আশার আলো’ দেখছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেছেন। বিবিসির খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) মস্কোতে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পুতিন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম রাশিয়ায় গেলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বহুল প্রতীক্ষিত এই সাক্ষাতে গুতেরেসকে পুতিন বলেন, অনলাইনে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংলাপ চলছে। এই সংলাপ থেকে ‘ভালো কিছুর’ই প্রত্যাশা করছেন পুতিন। তবে এই আশাবাদের মধ্যেও আগের মতোই কিছু বিষয়ে রাশিয়ার অনড় অবস্থানের কথাও জানিয়েছেন পুতিন। বলেন, ক্রিমিয়া ও ডনবাস ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না গেলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করে নিয়েছিল রাশিয়া। অন্যদিকে ডনবাস এলাকায় রাশিয়া সমর্থিত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’দের আধিপত্য রয়েছে।
তারা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। এবারের রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হলে ডনবাসকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণাও করে রাশিয়া। এর আগেও বিভিন্ন সময় ইউক্রেনের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গ এলেই এসব ইস্যুতে রাশিয়া অনড় অবস্থান দেখিয়েছে। মারিওপোলে জাতিসংঘকে কাজ করতে দিতে ‘নীতিগত’ সম্মতি এদিকে, ইউক্রেনের মারিওপোলে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রসকে কাজ করতে দেওয়ার বিষয়ে রাশিয়া ‘নীতিগতভাবে সম্মত’ হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, গুতেরেস-পুতিন বৈঠকে মারিওপোল এবং সেখানকার সবচেয়ে বড় ইস্পাত কারখানা অ্যাজভস্তলের চলমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে ইউক্রেনের অন্যতম বড় এই শহরটিতে তীব্র হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। শহরটি দখলের দাবিও করেছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেন বলছে, এখনো তাদের সৈন্যরা শহরটির দখল ছাড়েনি।
শহরটি যাদের দখলেই থাকুক, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর বলছে— হামলায় জর্জরিত মারিওপোলের অবস্থা সঙ্গীন। সেখানে হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ পরিস্থিতির কারণেই শহরটিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার প্রসঙ্গটি ক’দিন ধরেই আলোচিত। `গুতেরেস-পুতিন সাক্ষাতের আলোচনার বরাত দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, `রাশিয়া সেখানে জাতিসংঘ ও রেড ক্রসকে কাজ করতে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে।,
সেখানে কীভাবে কাজ করা যেতে পারে, সে বিষয়টি নিয়ে কৌশল গ্রহণে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের এক জন কর্মকর্তা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। এর আগে, পুতিন অবশ্য এক ফোনালাপে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ানকে বলেছেন, মারিওপোলে আর কোনো ধরনের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে না রাশিয়া। `এখন অ্যাজভস্তল ইস্পাত প্ল্যান্টে আটকে পড়া মানুষদের দায়িত্ব কিয়েভকেই নিতে হবে।,
অন্যদিকে সেখান থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেছে ইউক্রেন। গুতেরেসের মস্কো সফরের পরের কর্মসূচিতেই রয়েছে ইউক্রেন সফর। বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কির। কূটনীতিবিদরা মনে করছেন, `রাশিয়া ও ইউক্রেনের দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাক্ষাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতময় পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হবে।,
The post appeared first on Sarabangla | http://dlvr.it/SPJF8w
এই পোস্টটি শেয়ার করুন