এই মাত্র পাওয়া

আজ ,

নির্ধারিত সময়ের আগেই নেত্রকোনা জেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন

এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা ঃ নির্ধারিত সময়ের এক বছর পূর্বেই নেত্রকোনা জেলার শতভাগ এলাকা বিদ্যুতায়ন করেছে বিদুৎ বিভাগ। 

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মুহাম্মদ মাহবুব আলম জানান, আজ থেকে ১১ বছর আগে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অভাবে সারা দেশে অব্যাহত লোডশেডিং-এ জনজীবন অসহনীয় হয়ে পড়েছিল। বিদ্যুতের অভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হচ্ছিল। দেশের অর্থনীতি হয়ে পড়েছিল ভঙ্গুর, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও শিল্প কল কারখানায় দেখা দিয়েছিল এক ধরণের স্থবিরতা। 

 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সক্ষমতা অর্জনে দূরদর্শী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ফলে বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিপ্লব ঘটেছে বিদ্যুৎ খাতে।


প্রধানমন্ত্রী রূপকল্প ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দেন। ১১ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই ঘোষণা অনেকটা স্বপ্ন মনে হলেও নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই কাঙ্খিত লক্ষ্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ। চলতি মুজিব বর্ষে নেত্রকোনা জেলার শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। 

 এলাকা পরিচালক মোঃ আবুল কাশেম বাচ্চু বলেন, আগে নেত্রকোনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশীরভাগ গ্রাম সন্ধ্যার পর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যেতো। বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যুতের বহুমুখী সুফল উপভোগ করতে পারছে।

 নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ১৯৯৪ সালে নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের নেত্রকোনা-ঢাকা সড়কের পাশে রাজেন্দ্রপুরে সদর দপ্তর স্থাপনের মাধ্যমে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুতের যাত্রা শুরু হয়। নেত্রকোনা পল্লী সমিতির আওতায় নেত্রকোনা জেলার দশ উপজেলা ও পাশ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলা অর্ন্তভূক্ত। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৪টি পৌরসভা ও ১০০টি ইউনিয়নের ২৮৮২টি গ্রামের ২৪ লক্ষ ৫২ হাজার ৬ শত ৫০ জন মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই ¯েøাগানে উজ্জীবিত এবং আলোর ফেরিওয়ালা হয়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছে দিতে দিনে রাতে নিরলসভাবে কাজ করায় নির্ধারিত সময়ে এক বছর আগেই ১১ হাজার ৭ শত ৪৫ কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের কাজ শেষ করেছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া, মদন, বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে নেত্রকোনা সদর, কেন্দুয়া, পূর্বধলা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা। চলতি মুজিব বর্ষেই প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক এসব উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। 

 তিনি আরো বলেন, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে শতভাগ এলাকায় বিদ্যুতের সুবিধা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য পূরণে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতাও ছিল। বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদার জোগান দেওয়ার পাশাপাশি সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন স্থাপনসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। এসব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে সাফল্যের দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। দেশে স্বাধীনতার ৩৯ বছরে (১৯৭১-২০০৯) যেখানে ৪৭ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছিল, সেখানে মাত্র ১১ বছরে অর্থাৎ (২০০৯-২০২০) বছরে অবশিষ্ট ৫৩ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। সেটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।


এই পোস্টটি শেয়ার করুন
সবার আগে কমেন্ট করুন
কমেন্ট করতে ক্লিক করুন
comment url
আজকের সেরা খবর গতকালের সেরা খবর

এডিটর নির্বাচিত ভিডিও