মদনে এলএলপি সেচ সংযোগ নিয়ে মামলা, সংঘর্ষের আশষ্কা
মোতাহার আলম চৌধুরী,মদন (নেত্রকোনা)প্রতিনিধি ঃনেত্রকোনার মদনে পল্লী বিদ্যুতের এলএলপির সেচ সংযোগ নিয়ে জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএমসহ ৫ জনকে আসমি করে মামলা করেছেন স্কিম পরিচালক উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের মনিকা গ্রামের জাহেদ উদ্দিনের ছেলে মাসুম মিয়া। ৬ ফেব্রæয়ারি ২০২০ইং তারিখে আদালত বিবাদী পক্ষকে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করেন। এ সেচ সংযোগ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আশষ্কা রয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের মনিকা গ্রামে তিন বাড়ির নদীর পাড় হইতে টেংরা হাওরে শুকনো মৌসূমে ৬শ হেক্টর ফসলি জমিতে ১৭/১৮ বছর ধরে ডিজেল ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার পাম্প দিয়ে সেচ দিয়ে আসছেন মাসুম মিয়া। এ বছর হিলিপের অর্থায়নে পাকা ড্রেন নিমার্ণ হওয়ায় কৃষকরা কম খরচে জমিতে সেচ দিতে মাসুমকে এলএলপি সেচ সংযোগ দেয়ার আহবান জানান। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নসহ ২০১৯ সালের ০৩ নভেম্বর নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বরাবর আবেদন করেন।
এর বিপরীতে সেচ সংযোগ পাওয়ার জন্য এক মাস পর একই গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মোঃ আজমান মিয়া ২০১৯ এর ১১ ডিসেম্বর নেত্রকোনা জোনাল অফিস বরাবর আবেদন করে বিদ্যুৎ সংযোগের আদেশ পেয়ে এলএলপির ফি জমা দেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ও কোন সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় মাসুম মিয়া বিজ্ঞ মদন সহকারি জজ আদালত নেত্রকোনায় ( অন্য প্রকার) মামলা দায়ের করেন।
সোমবার সরেজমিনে গেলে মাসুম মিয়ার ডিজেল চালিত পাওয়ার পাম্প দিয়ে ফসলি জমিতে সেচ দেয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। এ ব্যাপারে কৃষক বিকাশ চক্রবর্তী, সিরাজুল ইসলাম, আবুল হোসেন, মাজহারুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, জুয়েল মিয়া ইদু মিয়া, কামরুল ইসলাম, হুমায়ুনের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে মাসুম মিয়ার এই স্কিমের পানি দিয়ে জমি চাষাবাদ করে আসছি। চলতি মৌসূমেও ওই সেচের পানি দিয়ে জমি রোপন করেছি। আজমান মিয়াসহ আরো ১৫/১৬ জন এ স্কিমের অংশীদার ছিল।
এ বছর আজমান স্কিম থেকে তার অংশ ছেড়ে দিয়েছে। সুকৌশলে সে এলএলপি সেচ সংযোগের আবেদন করে টাকা জমা দিয়ে সেচ সংযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। মাসুমের স্কিমের পানি দিয়ে আমাদের জমি রোপন করেছি। এখন আজমান কে সেচ সংযোগ দেয়া হলে আমাদের জমির কি হবে ?
এলাকার উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আশষ্কার সত্যতা স্বীকার করে আজমান মিয়া বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব ৯ আনা মাসুমকে ও আমাকে ৭ আনা দিয়ে বিষয়টি লিখিত ভাবে মীমাংশা করেন। কিন্তু মাসুম মিয়া আমাদেরকে কোন কিছু না বলেই এলএলপি সংযোগের জন্য আবেদন করলে পরে আমিও সংযোগের আবেদন করি। আমার আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় সংযোগের জন্য টাকা জমা দিই।
গোবিন্দশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান একে এম নুরুল ইসলাম ছদ্দু মিয়া জানান, এই স্কিমের বিষয়টি নিয়ে দু’টি গ্রæপ হওয়ায় উপজেলা সদরে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। মাসুম বর্তমানে ডিজেল চালিত পাওয়ার পাম্প দিয়ে কৃষকের জমিতে সেচ পরিচালনা করলেও তাদের উভয়কেই বিধি মোতাবেক চলতে বলা হয়েছে।
মদন পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ মাহবুব আলী জানান, গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের মনিকা গ্রামে তিন বাড়ির নদীর পাড়ে এলএলপি সেচ সংযোগ দেয়ার জন্য মাসুম ও আজমান পৃথক দুইটি আবেদন দাখিল করেন। এমপি মহোদয়ের সুপারিশে আজমানের টাকা জমা নেয়া হয়েছে। তবে এখনো সংযোগ দেয়া হয়নি।
সেচ নিয়ে একাধিক সালিশী বৈঠকের সত্যতা স্বীকার উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় ও কৃষকদের সেচ সুবিধার্তে বিধি মোতাবেক কাজ করতে উভয় পক্ষকে বলেছি। যদি কেহ ব্যতিক্রম করে এর দায়ভার তাকেই বহন করতে হবে।
এই পোস্টটি শেয়ার করুন