কুষ্টিয়ায় পৃথক ৩টি মামলায় ৬জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদন্ড
নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া \ কুষ্টিয়ায় পৃথক তিনটি মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন, ১ জনকে ১০ বছর ও ১ জনকে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদানসহ অর্থ দন্ড প্রদান রায় দিয়েছেন কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ পৃথক দু’টি আদালত। মাদক দ্রব্য আইনে ৩জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও বিভিন্ন মেয়াদের সাজাসহ অর্থদন্ড রায় ও এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে একজনকে ৭ বছর কারাদন্ড রায় প্রদান করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এই রায় ঘোষনা করেছেন। যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, পাবনা সদর উপজেলার শালগাড়িয়া ( মেরিলগেট ফরেস্টপাড়া ঈদগা মাঠের পাশে) জমির উদ্দিন এর ছেলে আতাউর রহমান ওরফে আকাশ ওরফে আতা (পলাতক), পাবনা সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর ( মন্দিপুর) পশ্চিমপাড়ার সিরাজ বিশ্বাসের ছেলে লিটন(পলাতক) ও কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ কান্দিরপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শামীম আহমেদ ওরফে রনি। এদেরকে ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ১৯(১) ধারার টেবিলের ৩(খ) ক্রমিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড রায় ঘোষনা করেন। এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের ৭ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামী হলেন, কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি গ্রামের কালাম এর ছেলে আল-আমিন। সেই সাথে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬মাসের সশ্রম কারাদন্ড রায় প্রদান করা হয়েছে। অপর দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) ধারায় কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর গ্রামের কৌতুক শেখের ছেলে সাদ্দাম হোসেনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অপর আরেকটি মামলায় ২০০০ এর ( ১)/৩০ ধারায় কুমারখালী উপজেলার বহলা গোবিন্দপুর গ্রামের কুড়াল শেখের ছেলে ফিরোজ হোসেনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড রায় ঘোষনা করেছেন বিচারক( জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক মুন্সী মোঃ মশিয়ার রহমান।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার মিরপুর- দৌলতপুর সড়কে অভিযান চালিয়ে ৩৭৬ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করে মিরপুর থানা পুলিশ। এ সময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে এই উদ্ধারকৃত ফেন্সিডিল বহনকারীরা হলেন, আতাউর রহমান আকাশ, লিটন, রনি ও হাবু। এমর্মে মিরপুর থানায় মাদক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১৩। তারিখ ২১/১১/২০১৭। হাবুর বিরুদ্ধে মামলাটি প্রমানিত না হওয়ায় তাকে বে-কসুর খালাস দেয়া। অপরদিকে কুমারখালীর শেরকান্দি গ্রামের আব্দুর রহিম শেখ ও তার স্ত্রী জুলিয়া খাতুন ও সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাড়ীতে বসবাস করতেন। ১লা অক্টোবর ২০১৫ সকাল ১১টার দিকে আল-আমিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে জুলিয়া খাতুন নামের গৃহবধুর মুখে এসিড নিক্ষেপ করলে ওই গৃহবধুর শরিল ঝলছে যায়। এব্যাপারে কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ০১। তারিখ ১লা অক্টোবর ২০১৫। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ১৩ আগষ্ট রাত ১০টার দিকে শেফালী নামের গৃহবধু তার ২ সন্তানকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে থাকলে সুযোগ বুঝে রাত ২টার দিকে সাদ্দাম হোসেন ও ফিরোজ ওই গৃহবধুর ঘরে প্রবেশ করে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে গৃহবধুকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে পালিয়ে যায়। এ মামলায় ফিরোজকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও সাদ্দাম হোসেনকে ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
এই পোস্টটি শেয়ার করুন