ধর্ষণের মামলায় বাদীর চরিত্রহননের বিধান বাতিলে বিল

ঢাকা: ঔপনিবেশিক আমলের সাক্ষ্য আইনের দুটি ধারায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মামলায় বাদীর চরিত্রহননের যে সুযোগ রয়েছে তা বাতিল করতে জাতীয় সংসদে ‘এভিডেন্স অ্যাক্ট ১৮৭২ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২২’ উত্থাপন করা হয়েছে। উত্থাপিত বিলে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনেরও সুযোগ তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে।,

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।,


সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন। তখন দেখানো যেতে পারে যে, অভিযোগকারী সাধারণত দুশ্চরিত্রা। সংসদে উত্থাপিত প্রস্তাবিত আইনে এই ধারাটি বাতিল করা হয়েছে।,


আর ১৪৬ (৩) ধারায় বলা হয়, তাহার চরিত্রের প্রতি আঘাত করে তার বিশ্বাস যোগ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা যায়। যদিও এমন প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে তিনি (অভিযোগকারী) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হতে পারে বা তিনি দণ্ডলাভের যোগ্য হিসেবে সাব্যস্ত হতে পারেন, অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার দণ্ডলাভের যোগ্য হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে- তহলে এমন প্রশ্ন করা যাবে।,


মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা দীর্ঘ দিন ধরে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই ঔপনিবেশিক আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এই ধারার সংশোধনের প্রস্তাব করে বিলে বলা হয়, আদালতের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না। এছাড়া সাক্ষ্য আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা যুক্ত করে মামলার বিচারে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনেরও সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। কেউ যাতে ভুয়া বা জাল সাক্ষ্যপ্রমাণ ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করতে না পারে, আদালত যদি মনে করে কোথাও আপত্তিজনক কিছু আছে। অথবা কেউ যদি আপত্তি তোলে, তাহলে ওই সাক্ষ্য-প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করা যাবে- এমন বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত বিলে।,


বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৮৭২ সালের এভিডেন্স অ্যাক্ট অনুযায়ী ধর্ষণ মামলার ভিকটিমকে জেরাকালে তার চরিত্র-সম্পর্কে প্রশ্ন করার সুযোগ রয়েছে। যা নারীর জন্য মর্যাদাহানিকর ও আইনের চোখে সমতা নীতির পরিপন্থী। এ পরিস্থিতিতে এভিডেন্স (অ্যামান্ডমেন্ট) ২০০২ এর ১৫৫ ধারার উপধারা ৪ বিলুপ্ত করা হয়েছে। অপরদিকে মামলার জেরাকালে কেবল আদালতের অনুমতি নিয়ে ন্যায় বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টা মামলার ভিকটিমকে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করার বিধান ১৪৬ ধারায় সংযোজন করা হয়েছে।,




from Sarabangla https://ift.tt/xE9Y8Xf
এই পোস্টটি শেয়ার করুন
সবার আগে কমেন্ট করুন
কমেন্ট করতে ক্লিক করুন
comment url
আজকের সেরা খবর গতকালের সেরা খবর

এডিটর নির্বাচিত ভিডিও