স্কুলে না গিয়েও্র বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন প্রধান শিক্ষক
দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি: প্রায় ৪ মাস ধরে বিদ্যালয়ে না গিয়েও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুরের এমকেসিএম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস.এম আলমগীর হাসান। শুক্রবার এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।,
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদলি হওয়ার পর ২০১৮ সালে সহকারী শিক্ষক থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এস.এম আলমগীর হাসান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে অনিয়ম, অবহেলা দিয়েই চলছে বিদ্যালয়টি। ল্যাব ও বিজ্ঞানাগারের সরঞ্জাম কেনার জন্য সরকারী বাজেট বরাদ্ধ থাকলেও প্রতিবছর এ খরচ কোথায় যায় তা কেউ বলতে পারে না। সরকারি বাজেটের ব্যয় শুধু বিল ভাউচারেই। এ নিয়ে অন্যান্য শিক্ষকগন কিছু বলতে গেলেই শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করে দেন তিনি। ইতোমধ্যে স্কুলের বেহাল অবস্থা নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকগন সংবাদ পরিবেশন করতে গেলে তাদের প্রান নাশের হুমকি দেন তিনি।,
এ বিষয়ে স্কুলের সহকারি শিক্ষক, অবিভাববকবৃন্দ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক কাউকেই তোয়াক্কা করেন না তিনি। শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ, পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কম দেয়া, বিভিন্ন অযুহাতে অতিরিক্ত ফি আদায়, স্কুলের বাৎসরিক বরাদ্ধ নয় ছয় করে অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক এস.এম আলমগীর হাসানের অপসারণের দাবীতে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছেন ঐ স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।,
এর আগেও বেশ কয়েকবার স্থানীয় সচেতনমহল সহ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও আলোচনায় বসেছেন। তবে গেল ২৮ জুন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দাবী মেনে নিয়ে স্কুল থেকে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করে অন্য স্থানে চলে যাওয়ার প্রতিশ্রæতির ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও দায়িত্ব থেকে সরে যাননি তিনি। এ ব্যপারে গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে ময়মনসিংহ বিভাগের উপ-পরিচালক স্কুল পরিদর্শন করলে নানা অনিয়মের সত্যতা খুজে পান।,
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকদিন ধরেই আমাদের টিফিন দেওয়া হয়না। আমাদের প্রধান শিক্ষক না থাকায় আমরা ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পাচ্ছি না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের সাথে কেমন আচরণ করতেন জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী বলেন, স্যার আমাদের সাথে খুব বাজে আচরণ করেন। ,
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক স্কুলে না আশায় প্রত্যয়নপত্র, প্রশংসাপত্র, মার্কসিট, সার্টিফিকেট প্রদান সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ নিতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা। স্কুলের প্রশাসনিক কাজও বন্ধ আছে। এ বিষয়ে আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের নানা ধরনের হুমকি প্রদান করেন তিনি।,
শিক্ষার্থী অভিভাবক রফিকুল ইসলাম জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হাসান শিক্ষার্থীদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করেণ। বিদ্যালয়ে আমাদের সন্তানের পড়াশোনার ভালো পরিবেশ দেখছি না। আমরা অভিভাবকরা কখনও কখনও স্কুলে গেলে আমাদের সাথেও খারাপ আচরণ করেণ তিনি। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় আছি। এ নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন এলাকাবাসী।,
এ বিষয়ে ওই প্রধান শিক্ষক এস.এম আলমগীর হাসান এর সাথে কথা বলতে গেলে, সাংবাদিক পরিচয় জেনে উল্টো গাল মন্দ করেন তিনি।,
এ বিষয়ে ইউএনও রাজীব-উল-আহসান বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিষয়টি আমি শুনেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’


