কৃচ্ছ্রসাধন অব্যাহত রাখতে হবে, কম গুরুত্বের প্রকল্প স্থগিত

কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময় এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে কৃচ্ছ্রতাসাধনের ধারা অব্যাহত রাখতে ফের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, সরকারি ব্যয় কমাতে কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র কেনা এড়াতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও শ্রেণি বিভাজন করে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।,


বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রকল্পের ব্যয় ও গাড়ির ব্যবহারসহ বেশকিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন তিনি। জানান, বৈশ্বিক সংকটের এই সময়ে সরকারি ব্যয় কমাতে কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র কেনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যেসব জিনিসপত্র কেনা জরুরি নয়, তা বন্ধ রাখতে হবে।,


মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খরচ কমাতে প্রধানমন্ত্রী আজও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্য আমাদের প্রকল্পগুলোকে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’— এই তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রকল্প সেগুলো, যেগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এসব প্রকল্পের পুরো টাকা খরচ করা যাবে। ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলো এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোতে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ খরচ করা যাবে। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির যেসব প্রকল্প ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেগুলোর বাস্তবায়ন স্থগিত থাকবে।


মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুরুত্ব অনুযায়ী প্রকল্পগুলোকে ‘এ’, ‘বি’ বা ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ফেলবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকল্পের ক্যাটাগরি পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়লে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে।,


মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেনাকাটাতে যথাসম্ভব যেগুলো ইমিডিয়েট, না কিনলে হবে না, সেই জাতীয় কেনাকাটা চলবে। যেগুলো আপাতত না কিনলেও চলবে, সেসব কেনাকাটা আপাতত স্থগিত থাকবে। যেমন— গাড়ি কেনার কথা জোরালোভাবে মানা করে দেওয়া হয়েছে। বৈদেশিক প্রশিক্ষণের বিষয়েও আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ক্রয়সংক্রান্ত (প্রকিউরমেন্ট) বিষয়ের অধীন বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হলে যাওয়া যাবে।,


বৈদেশিক সাহায্য সংক্রান্ত বিষয়েও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রকিউরমেন্ট বিষয় ছাড়া অন্য বিষয়ে সরকারি টাকায় বিদেশ যাওয়া যাবে না। যেমন— সরকারের টাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১০ জন স্টাডি ট্যুরে যাবেন— এটা বন্ধ হবে।,


এছাড়া গাড়ি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া এবং উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এসব বিষয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।,


এদিকে, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুইটি উড়োজাহাজে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়িত্বে থাকা সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।,


ব্রিফিংয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, এখন থেকে এটা ফিক্সড করে দিতে হবে। কেন দু’টো উড়োজাহাজে ধাক্কা লাগল? উড়োজাহাজ তো একা একা ধাক্কা লাগতে পারে না, এখানে তো অনেকেই ডিউটি করে। এটা ওয়ার্কআউট করে প্রতিটি কাজের দায়িত্ব (রেসপন্সিবিলিটি) ফিক্সড করতে হবে। ওই সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন, সবাইকে এর দায় বহন করতে হবে এবং কীভাবে তাদের কমপেনসেট করতে হবে, এটি ফাইন্ড আউট করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। বাসস।,



from Sarabangla https://ift.tt/hOxC6nc
এই পোস্টটি শেয়ার করুন
সবার আগে কমেন্ট করুন
কমেন্ট করতে ক্লিক করুন
comment url
আজকের সেরা খবর গতকালের সেরা খবর

এডিটর নির্বাচিত ভিডিও