প্রবাসীদের বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক
এম এ রহমান মাসুম: মহামারি করোনাভাইরাসের মতো প্রতিকূল পরিবেশে প্রবাসীদের পাশে থাকতে রেমিট্যান্সের ওপর বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
বৈধপথে প্রবাসীদের যে কোনো পরিমাণ রেমিট্যান্সের ওপর সরকার দুই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। তবে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা পাওয়া যাবে আরও এক শতাংশ। অর্থ্যাৎ মোট তিন শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক।’
এছাড়া করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক শিল্প ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঘুরে দাঁড়াতে বিশেষ নজর দিয়েছে ব্যাংকটি। এর সঙ্গে গ্রাহকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার প্রতি জোর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, ইতোমধ্যে সঞ্চয়ী আমানত কিংবা ক্রেডিট কার্ডের বিলের ওপর তিনমাস পর্যন্ত জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে। প্রবাসীদের রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে সরকারের প্রদত্ত ২ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও এক শতাংশ দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসী ভাইদের সুবিধায় এমন সুযোগ রেখেছি আমরা।
তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকে রেমিটেন্স প্রবাহ এখনো বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে। করোনার প্রভাব এখনো রেমিট্যান্সে তেমন কমেনি। করোনো পরিস্থিতিতে ইসলামী ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং এম ক্যাশ বর্তমানে বেশ গতি পেয়েছে। লক্ষাধিক মোবাইল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতনের টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১৭৪ কোটি টাকা পেয়েছি আমরা।
ব্যাংকের গ্রাহকদের উদ্দেশে ডিএমডি) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া বলেন, করোনা কতোদিন থাকে ঠিক নেই, তাই গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান থাকবে তারা যেন ডিজিটাল ব্যাংকিং এ অভ্যস্ত হন। কারণ ক্যাশ টাকা করোনাভাইরাস ছড়ানো ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। একারণে এটিএম কার্ড, এম ক্যাশ ও অনলাইনের সেবা নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছি।
ব্যাংকটির সূত্রে আরও জানা যায়, তহবিল স্থানান্তর ও অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত সেবার দিতে ইন্টারনেট ভিত্তিক কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত করেছে ইসলামী ব্যাংক। ফলে শাখায় না গিয়েও ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেবা নিতে সক্ষম গ্রাহকরা। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গ্রাহক কিংবা কর্মী উভয়েরই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ফেস মাস্ক পরা এবং শাখার প্রবেশদ্বারে ফুট-ট্রে ও হ্যান্ডওয়াশ স্টেশন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অফিসের ভেতরে অবস্থানকারী কর্মীদের পিপিই পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেবা নিতে সব শাখায় গ্রাহকদের নির্ধারিত আসন এবং দাঁড়ানোর স্থানও চিহ্নিত করে দিয়েছে ব্যাংকটি। পাশাপাশি কর্মীদের যাতায়াত সুবিধা দিতে নিশ্চিত করা হয়েছে যানবাহন সুবিধা।
বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং ধারার পথিকৃৎ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের এটিএম ও সিআরএমসহ প্রায় এক হাজার মেশিন রয়েছে। বুথে প্রযুক্তিগত সমস্যা মাঝে মধ্যে থাকলেও সার্বিকভাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবি শুরু থেকে করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবা দেওয়া হচ্ছে। করোনা ঝুঁকিভাতা হিসেবে সরকারের ঘোষণা বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয়েছে কর্মীদের স্বাস্থ্যবিমা।
এছাড়া সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে জাতীয় দুর্যোগকালে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বিশেষ অনুদানের পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন কার্মকাণ্ডেও সরাসরি অংশ নিচ্ছে করছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
রহমান/এসএম
এই পোস্টটি শেয়ার করুন